Inqilab Logo

রোববার, ১২ মে ২০২৪, ২৯ বৈশাখ ১৪৩১, ০৩ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

ভারতের ‘চীন ভীতি’তে ঢাকার বুদ্ধিজীবীদের ঘুম হারাম

| প্রকাশের সময় : ৩ এপ্রিল, ২০১৭, ১২:০০ এএম

স্টালিন সরকার : দিল্লির ‘চীন ভীতি’তে ঢাকার কিছু বুদ্ধিজীবীর ঘুম যেন হারাম হয়ে গেছে। নাওয়া-খাওয়া ভুলে তারা মায়াকান্না করছেন ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্ভাব্য প্রতিরক্ষা চুক্তি (ডিফেন্স প্যাক্ট) স্বাক্ষরে ঢাকাকে সম্মত করতে। প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরের আগে সরকারের নীতি নির্ধারকরা যাতে এ ব্যাপারে সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারেন সে জন্য গায়ে পড়ে শলাপরামর্শ দিচ্ছেন। ‘চীনের সাবমেরিন না কিনলে হয় না’ এমন টাইপের তোয়াজে ব্যর্থ হয়ে এখন তারা কোমড়বেঁধে মাঠে নেমেছেন দিল্লি-ঢাকার প্রতিরক্ষা চুক্তি চাই-ই। চীনের সাবমেরিনে বাংলাদেশের নৌ-বাহিনীর শক্তি বৃদ্ধিতে তাদের উদ্বেগের যেন শেষ নেই। এ জন্য ভারতের সাবেক প্রতিরক্ষা মন্ত্রী মনোহর পারিকরের ঢাকা সফর, পররাষ্ট্র সচিব জয়শঙ্করের ঢাকা সফর, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দিল্লি সফর দ্ইু দফায় পিছিয়ে যাওয়া, পর্দার আড়ালে দিল্লির কূটনীতিকদের দেনদরবারের পাশাপাশি ঢাকার মুখচেনা এই বুদ্ধিজীবীরা উঠে পড়ে লেগেছেন। দিল্লির সাউথ বøাকের লবিস্ট হয়ে যে সাংবাদিকরা ঢাকায় এসেছিলেন তাদের চেয়েও যেন বড় লবিস্ট ঢাকার এই বিভিন্ন পেশাজীবী বরেণ্যরা। তারা কখনো পর্দার আড়ালে কখনো ঐক্যবদ্ধভাবে সরকারের ওপর চাপ দিয়েই যাচ্ছেন। তাদের মনোবাঞ্ছা চীনের সাবমেরিনে সামরিক শক্তিতে বাংলাদেশ বিশ্বদরবারে স্বতন্ত্র শক্তিতে উজ্জীবিত হওয়ার বদলে ভারতের ওপর নির্ভরশীল শ্রেয়। এই কাজে তারা ব্যবহার করছেন পাকিস্তানিকরণ (!) কার্ড।
ঢাকার গুলশানে হোটেল লেকশোরে গত শনিবার হয়ে গেল একটি গোলটেবিল সেমিনার। ইনস্টিটিউট অফ কনফ্লিক্ট ল অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট স্টাজিজ (আইক্ল্যাড) নামক একটি থিঙ্ক ট্যাঙ্ক প্রতিষ্ঠান আয়োজিত এ সেমিনারের প্রধান প্রতিপাদ্য ছিল ‘বাংলাদেশ-ভারত সম্পক ঃ প্রাপ্তি ও প্রত্যাশা’। সেখানে ওই বুদ্ধিজীবী খ্যাত সুশীল, সাবেক আমলা, সাবেক বিচারপতি, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, সাবেক কূটনীতিক, এনজিওকর্মী, মানবাধিকার কর্মী, আইনজীবী, সামরিক বিশেষজ্ঞ, সাংবাদিক, সাংস্কৃতির ব্যাক্তিত্বসহ দেশবরেণ্য (!) ব্যক্তিত্বরা উপস্থিত হন। তারা ভারতের চীন ভীতির শঙ্কা এবং ভারতপ্রীতিতে উজ্জীবিত হয়ে জ্ঞানগর্ভ বক্তৃতা করেন। প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরের আগে অতি গুরুত্বপূর্ণ এই আলোচনা সভাটির খবর প্রায় সবগুলো টিভিতে প্রচার হলেও প্রিন্ট মিডিয়ায় তেমন গুরুত্ব পায়নি। সংসদ ভবন এলাকায় ইন্টার পার্লামেন্টারি ইউনিয়ন (আইপিইউ) সম্মেলনের কারণেই হয়তো প্রিন্ট মিডিয়ায় এ আলোচনা সভার খবর গুরুত্ব দেয়নি। সেমিনারে যে ধারণাপত্র উপস্থাপন করা হয় তাকে বাংলাদেশ-ভারতের বন্ধুত্বের সম্পর্কের বিস্তর চিত্র তুলে ধরে বলা হয় দুই দেশের মধ্যেকার সম্ভাব্য প্রতিরক্ষা চুক্তির বিরোধিতা যারা করছেন তারা পাকিস্তানি মনোভাবাপন্ন। ’৭১ এ সহায়তা করেছে এই জন্য ‘ভারত জীবন ভারত মরণ’ এই চেতনায় ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের নিরাপত্তা চুক্তির প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরা হয়। বলা হয় বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে প্রতিবেশীসূলভ প্রতিরক্ষা বিষয়ক আদান-প্রদান চলমান রয়েছে। দুই দেশের সেনাবাহিনীর প্রশিক্ষণ কিংবা তথ্যের আদান-প্রদান চলছে। ফলে প্রতিরক্ষা চুক্তিতে নতুন কিছু সংযুক্ত হওয়ার সম্ভাবনা নেই। প্রতিরক্ষা বিষয়টি একটি ব্যাপ্তিময় বিষয়; যার আওতাধীন অনেক কিছুকেই ঢোকানো সম্ভব। দুই দেশের মধ্যে সম্পর্কের মৈত্রী থাকলে প্রতিরক্ষা মৈত্রীতেও খুব বড় কোনো সমস্যা তৈরি হওয়ার কথা নয়। বক্তাদের কেউ কেউ দুই দেশের দেনা-পাওনার বিষয় ভারতের মনোযোগী হওয়া উচিত মন্তব্য করলেও বিচারপাতি সামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক স্পষ্টভাবে বলেনÑ দুই দেশের দেনা-পাওনা হিসেব করলে ভারত বঞ্ছিত হয়েছে; বরং বাংলাদেশ বেশি পেয়েছে; ঢাকার প্রাপ্তির পাল্লা ভারী। ভারত যা করেছে বাংলাদেশের জন্য বাংলাদেশ তার কিছুই করেনি। ওলিউর রহমান সম্ভাব্য সামরিক চুক্তি নিয়ে কেন বিতর্ক করা হচ্ছে তা নিয়ে বিস্ময় প্রকাশ করেন। কোনো কোনো বক্তা বিস্ময় প্রকাশ করেন এই বলেন যে, যারা তিস্তা চুক্তির দাবি জানিয়ে প্রতিরক্ষা চুক্তির বিরোধিতা করছেন তাদের পাকিস্তানে পাঠিয়ে দেয়ার ব্যবস্থা করা হয় না কেন? সীমান্ত হত্যা, টিপাইমুখে বাঁধ, ট্রানজিট চুক্তি, চট্টগ্রাম ও মঙ্গলা বন্দর ভারতকে ব্যবহারের সুযোগ দেয়া, ৫৪ অভিন্ন নদীর পানি না দেয়া, ২৫ বছরের পানি চুক্তি অনুযায়ী পানি না দেয়া ইত্যাদিসহ বাংলাদেশের স্বার্থ নিয়ে দু’একজন বক্তব্য দিলেও অধিকাংশ বক্তাই দুই দেশের বহুমাত্রিক সম্পর্কের প্রসঙ্গ তুলে তিস্তা চুক্তিকে হালকা সেন্টিমেন্ট হিসেবে অবিহিত করেন। শাহরিয়ার কবির তো বলেই ফেললেন ১৯৯৭ সালে পার্বত্য শান্তি চুক্তির বিরোধিতার মতোই দুই দেশের মধ্যেকার সম্ভাব্য সামরিক চুক্তির বিরোধিতা করা হচ্ছে। বেগম খালেদা জিয়াসহ যারা এ সব করছে সরকারকে তাদের কঠোর হাতে দমনের পরামর্শ দিয়ে দেশকে পাকিস্তানিকরণের প্রক্রিয়া থেকে মুক্ত রাখার প্রস্তাব দেন। উল্লেখ্য, সরকারের নীতি নির্ধারকদের খুশি করতে বক্তারা কারণে অকারণে ’৭৫ সালের ১৫ আগস্ট, মুক্তিযুদ্ধ প্রসঙ্গ টেনে আনেন।
 প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দিল্লি সফরের প্রস্তুতির সংক্রান্ত খবর সংগ্রহের নামে লবিস্ট হয়ে দিল্লির ৭ জন সাংবাদিক ঢাকা সফরে আসেন। তারা সরকারের মন্ত্রী, উচ্চপর্যায়ের আমলা এবং গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের সঙ্গে দেখা করে ঢাকার প্রস্তুতির খবর সংগ্রহ করেন। পাশাপাশি ঢাকার তাদের মুখপত্র বুদ্ধিজীবীদের দিল্লির সাউথ বøকের বার্তা দেন। সে বার্তা পাওয়ার পরই কার্যত লেকশোরে এই আলোচলা সভার আয়োজন করা হয়। উদ্দেশ্য, তাদের সম্মিলিত আওয়াজ সরকারের নীতি নির্ধারকদের কানে পৌঁছে দেয়া। উল্লেখ করা প্রয়োজন যে দিল্লির ওই সাংবাদিকরা তাদের ঢাকা সফরের চালচিত্র মিডিয়ায় তুলে ধরেন। তারা তিস্তা চুক্তির দাবিতে বাংলাদেশের মানুষের ‘অদ্ভুত সেন্টিমেন্ট’ হিসেবে আখ্যায়িত করে প্রচারণা চলাচ্ছেন। এদের একজন ঢাকা থেকে প্রকাশিত একটি জাতীয় দৈনিকে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতের চিত্র তুলে ধরে লিখেছেন; বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী তাদের জানান যে, বাংলাদেশ ও ভারতের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের সেরা সময় এখন চলছে। দুই দেশের মধ্যে অধিকাংশ সমস্যাই মিটে গেছে। পানিবণ্টন সমস্যার সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য সমাধান হবে। এ দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামকে যারা সমর্থন করেনি তারাই এখন সক্রিয়ভাবে সরকারের বিরোধিতা করে চলেছে। তিস্তা চুক্তি হচ্ছে না বলে ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক ভেসে গেল এমন ভাবছি না। বিবিসিতেও এদের এক সাংবাদিক প্রায় নিত্যদিন দিল্লির সঙ্গে ঢাকার কেমন আচরণ করা উচিত বা দুই দেশের মধ্যে সামরিক চুক্তি কেন জরুরি সেসব নিয়ে খবর লিখছেন। বাংলাদেশের সঙ্গে  ভারতের প্রধানমন্ত্রী মোদী যেন আগের কংগ্রেস সরকারের মতোই আচরণ করেন উপযাচক হয়ে সে পরামর্শও দেন।
ভারতের এই ৭ সাংবাদিকদের ঢাকা সফর এবং গুলশানের হোটেল লেকশোরে আয়োজিত সভার আয়োজকদের ‘চেতনা’ একই সূত্রে গাছা। বক্তাদের মধ্যে দু’তিনজন ছাড়া সকলের সুর ছিল অভিন্ন। যেন একই ঝুড়ির আম। লেকশোরে আয়োজিত গোলটেবিলে দিল্লিপ্রীতি-পাকিস্তানভীতি  এবং চিন্তা চেতনায় ঢাকার চেয়ে দিল্লির স্বার্থ রক্ষাকে যারা প্রাধান্য দিয়ে রাজনীতি, সমাজনীতি, অর্থনীতি এবং পররাষ্ট্রনীতি নিয়ে ভাবতে অভ্যস্ত মূলত তারা দেশপ্রেমিকের মতোই অভিমত দেন।  কথাবার্তায় কোনো রাখঢাক নেই। ভাবখানা চীন নয় ভারত আমাদের বন্ধু। দিল্লির কাছে মাথা নীচু করে বাঁচতেও গৌরবের। দুই-তিনজন ব্যতিক্রম ছাড়া প্রত্যেক বক্তাই একথা জোর দিয়েই বলেছেন যে, বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে সম্পর্ক রাজনীতিনির্ভর। বাংলাদেশ ও ভারতের বন্ধুত্ব বহুভাবে সম্পর্কিত। মুক্তিযুদ্ধে সহায়তার জন্য বাংলাদেশ দিল্লির ওপর নির্ভরশীলও বটে। এই গভীর বন্ধুত্বকে জনগণের ‘অদ্ভুত সেন্টিমেন্ট তিস্তা চুক্তি’ না হওয়া দিয়ে বিচার করা উচিত নয়। ভারত মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশকে সহায়তা করেছে। ’৭৪ সালে মুজিব-ইন্দিরা চুক্তি করেছে, ’৯৭ সালে ২৫ বছরের গঙ্গা চুক্তি  করেছে। ভারতের কারণে ’৯৭ সালে সন্তু লারমার সঙ্গে শান্তি চুক্তি করেছে। দুই দেশের মধ্যে ছিটমহল বিনিময় হয়েছে। ২০১১ সালে মনমোহন সিং এর ঢাকা সফরের সময় যে তিস্তা চুক্তি সই হওয়ার কথা ছিল; ২০১৫ সালে  নরেন্দ্র মোদির সময় সে চুক্তি সম্ভব হয়নি; সেটাকে সেন্টিমেন্ট হিসেবে ধরে রাখা ঢাকার উচিত নয়। তিস্তা চুক্তির দাবিকে বাংলাদেশে অদ্ভুত একটা ‘সেন্টিমেন্ট’ উল্লেখ করে এটা পাকিস্তানপ্রেমীদের অপপ্রচার হিসেবে অবিহিত করা হয়। শুধু তাই নয় শাহরিয়ার কবির সম্ভাব্য প্রতিরক্ষা সমঝোতা স্বারকের স্বাক্ষরের বিরোধিতাকারীদের কঠোর হস্তে দমনের দাবি জানান। মেজর জেনারেল (অব) আবদুর রশিদ যে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন তাতে প্রতিরক্ষা চুক্তি বাংলাদেশের জন্য অপরিহার্য হিসেবে তুলে ধরা হয়। একজন মহিলা লেখিকা তো সভা থেকে এসে এক অনলাইনে প্রবন্ধ লিখে প্রশ্ন তুলেছেন, যদি বাংলাদেশের ওপর কেউ আক্রমন করে? বা ভারতের ওপর কেউ আক্রমন করে? তাহলে দুই দেশ কী বন্ধু হিসেবে নীরব থাকতে পারবে? একাধিক বক্তা বললেন, পাকিস্তানে যেমন কিছু রাজনৈতিক দল ভারত বিরোধিতাকে রাজনীতিতে টিকে থাকার কৌশল হিসেবে বেছে নিয়েছে; বাংলাদেশেও পাকিস্তানের রাজনৈতিক এজেন্টরা একই পথে হাঁটছে। বিএনপিতেই শুধু নয় যারা তিস্তা চুক্তির দাবি করছেন তাদের এক হাত নেয়া হয়। বক্তারা বলেন, বাংলাদেশ-ভারত দু’টি স্বাধীন প্রতিবেশী দেশ। প্রতিবেশি দেশ বদলানো যায় না। বর্তমানে সবচেয়ে বেশি বিতর্ক হচ্ছে সম্ভাব্য ‘প্রতিরক্ষা’ চুক্তি নিয়ে। পাকিস্তানের দোসররা প্রচার করছে ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশ প্রতিরক্ষা চুক্তি সম্পাদন করলে তা হবে বাংলাদেশের জন্য ভয়ঙ্কর এবং ভারতের অঙ্গরাজ্যে পরিণত হবে বাংলাদেশ। এরা পার্বত্য শান্তি চুক্তি করার পর, স্থল সীমান্ত চুক্তির পর, মুজিব-ইন্দিরা চুক্তির পর, গঙ্গার পানি চুক্তির পর একই ধোঁয়া তুলেছিল। অথচ ক্ষমতায় গিয়ে ওই বিএনপি-জামায়াত এসব চুক্তির কোনোটিই বাতিল করেনি। তিস্তা চুক্তির দাবি এবং সামরিক চুক্তির বিরোধিতা রাজনৈতিক দূর্তামি হিসেবে ইস্যু করে মাঠ গরম রাখার চেষ্টা। প্রশ্ন হলো এই পরজীবী বুদ্ধিজীবীরা কী নেপালের কাহিনী জানেন না!
ভারতের সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী মনোহর পারিকর তার তিন বাহিনী প্রধানকে নিয়ে গত বছরের ২ ডিসেম্বর ঢাকা সফর করেন। তারপর প্রধানমন্ত্রীর দিল্লী সফর দুই দফায় পিছিয়ে যায়। পত্রিকান্তে সোশাল নেটওয়ার্কে খবর বের হয় বাংলাদেশকে ভারতের সাথে ২৫ বছরের প্রতিরক্ষা চুক্তি (ডিফেন্স প্যাক্ট) করতে প্রস্তাব রাখা হয়েছে। সর্বশেষ গত ২৩ ফেব্রæয়ারি ভারতের পররাষ্ট্র সচিব জয়শঙ্কর বাংলাদেশ সফরে করেন। জয়শঙ্কর ঢাকা সফরে সরকারের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের সঙ্গে আলোচনা গোপন রাখা হলেও ২৩ ফেব্রæয়ারি ইংরেজি দৈনিক নিউএজ শিরোনাম করে ‘দিল্লী ঢাকাকে ডিফেন্স ডিল করতে চাপ দিচ্ছে’। ভারতের সেনা প্রধান বর্তমানে বাংলাদেশ সফরে রয়েছেন। আবার ওই গোলটেবিল বৈঠকে জাসদের নেতা মঈন উদ্দিন খান বাদল বলেছেন, চীনের কাছ থেকে কেনা সাবমেরিন উদ্বোধনের দিন ভারতীয় রাষ্ট্রদূত আমার কাছে জানতে চান ‘সাবমেরিন দিয়ে কি করবেন’? সবগুলোই একই সুত্রে গাঁথা। আলোচনার মাধ্যমে দুই দেশের মধ্যকার অনেক সমস্যা সমাধান হয়েছে। তিস্তা চুক্তির বিষয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের সদিচ্ছার অভাব নেই। রাজ্য সরকার বাধা দিচ্ছে। তারপরও আশা করছি তিস্তা সমস্যা সমাধান হয়ে যাবে। মেজর জেনারেল (অব) আবদুর রশিদ প্রবন্ধে বলেন, ৪৭ বছরে বাংলাদেশ ভারত দুই দেশের মধ্যে য্দ্ধু হয়নি। স্থল ও সমুদ্র সীমাসহ অনেক অমীমাংসিত বিষয়ের সমাধান হয়েছে। রাজনৈতিকভাবে বন্ধুকে সামরিক ভাবে বৈরী ভাবার কোনো যুক্তি নেই। কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ বলেন, দুই দেশের সম্পর্কে বহুমাত্রিকতা রয়েছে। শুধু তিস্তা নিয়ে আমরা এত ব্যস্ত হয়ে পড়েছি যে অন্যান্য সমস্যা নিয়ে আলোচনা হচ্ছে না। সত্যিই কী তাই? কৃষি ও অর্থনীতি নিয়ে কাজ করেন খলীকুজ্জামান। তিনি কি উত্তরাঞ্চলের কৃষকদের পানি সংকটের খবর রাখেন না? নাকি দিল্লির কাছে তারা বাঁধা পড়ে রয়েছেন? ঢাকার বুদ্ধিজীবীদের এই ঘুমহীন কর্মযজ্ঞ দেখে দিল্লি কী বলে সেটাই দেখার অপেক্ষা।



 

Show all comments
  • কবির হোসেন ৩ এপ্রিল, ২০১৭, ১:২১ পিএম says : 1
    এরাই দেশের সবচেয়ে বড় ক্ষতি করছে
    Total Reply(0) Reply
  • রুবেল ৩ এপ্রিল, ২০১৭, ১:২৭ পিএম says : 0
    এই মুখোশধারীদের মুখোশ উম্মোচন করায় দৈনিক ইনকিলাব ও লেখক স্টালিন সরকারকে অসংখ্য মোবারকবাদ।
    Total Reply(0) Reply
  • জাকির হোসাইন ফিরোজ ৩ এপ্রিল, ২০১৭, ১:৪৪ পিএম says : 0
    এই পরজীবী বুদ্ধিজীবীদের কারণে আজকে আমরা এতটা পিছিয়ে আছি, না হলে আমরা আরো অনেক দূর এগিয়ে যেতাম।
    Total Reply(0) Reply
  • মিলন খন্দকার ৩ এপ্রিল, ২০১৭, ১:৪৬ পিএম says : 0
    ঢাকার এইসব বুদ্ধিজীবীদের বলতে চাই ভাই আগে দেশের স্বার্থ নিয়ে ভাবুন। তারপরে বন্ধু রাষ্টে কথা ভাবেন।
    Total Reply(0) Reply
  • সোলায়মান ৩ এপ্রিল, ২০১৭, ১:৫০ পিএম says : 0
    কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ সাহেবকে বলতে চাই একটু কষ্ট করে উত্তরাঞ্চলে গিয়ে কৃষকদের সাথে কথা বলে আসেন, তারপর বক্তব্য দিন। আশা করি তখন আপনার এই বক্তব্য পরিবর্তন হয়ে যাবে।
    Total Reply(0) Reply
  • Md Eshak ৩ এপ্রিল, ২০১৭, ২:০২ পিএম says : 0
    হয়তো একদিন এই জাতীকে সিরিয়া কাশ্মীর বা ফিলিস্তিন এর ভাগ্য বরণ করতে হবে। সামরিক বাহীনিকে দন্তহীন বাঘ বানানোর চুক্তি করার পায়তারা চলছে।
    Total Reply(0) Reply
  • Monir Chowdhury ৩ এপ্রিল, ২০১৭, ২:০৩ পিএম says : 0
    তাহলে কি হচেছ? সব কিছুই কি ভারতের স্বার্থে? কিসের জন্য এই সফর? মিডিয়ায় যা বের হচেছ তা তো সব ভারতের অনুকুলে। অামরা কি পেলাম বা পাব?
    Total Reply(0) Reply
  • Jafor ৪ এপ্রিল, ২০১৭, ১:৪৩ এএম says : 0
    I don't Support any defense treaty with India. .please stop drama with Bangladeshi people.
    Total Reply(0) Reply
  • Nannu chowhan ৪ এপ্রিল, ২০১৭, ৩:০০ পিএম says : 0
    Era buddijibi noy,bodh sjoktihin nobba rajakar jara naki eai deshke bhrotioder khachai bpondi kore abar poradhin banate chai.
    Total Reply(0) Reply
  • ibrahim islam Emon ৫ এপ্রিল, ২০১৭, ১১:৪০ এএম says : 0
    বাংলাদেশের তেলদিয়া বাংলাদেেশর মাথার উপর কাঠাল ভাংগে খায়ে ভারত সময় থাকতে শাবধান দেশটাতো অামাদের তাই চিন্তাটাও অামাদের ওরাতো বুদ্ধিজিবি না দেশের শত্রু রাজাকার
    Total Reply(0) Reply
  • জাহিদ ৬ এপ্রিল, ২০১৭, ১:৪৩ পিএম says : 0
    দেশের মানুষকে ডুবায়ে।অন্নের সাথে বন্দু করে। কি হবে দেশেমানুষ সাগরে ভাসবে
    Total Reply(0) Reply
  • হাসান ৭ এপ্রিল, ২০১৭, ৫:৫৩ এএম says : 0
    বাংঙ্গালিদের মধু বলে বিষ খাওয়াচ্ছে ভারত
    Total Reply(0) Reply
  • মোঃ দুলাল ৯ এপ্রিল, ২০১৭, ১২:৪৯ এএম says : 0
    দেশের কিছু ................. দেশের বিরুদ্ধে কাজ করে , যখন তাদের মুখোশ উম্মোচন করা হয় তখন মুখোশ উম্মোচনকারীদের রাজাকার বলে গালি দেয় ।আমরা সাধারণ মানুষ পাকিস্তান ,ভারত কোন দেশেরই দালালদের পছন্দ করিনা ।আমরা চাই দেশের স্বার্থে কথা বলুন , দেশের স্বার্থে কাজ করুন ।
    Total Reply(0) Reply
  • Nasym ৯ এপ্রিল, ২০১৭, ১:৫৮ এএম says : 0
    All of them are in ....................
    Total Reply(0) Reply
  • এস, আনোয়ার ৯ এপ্রিল, ২০১৭, ১০:৩৮ পিএম says : 0
    মীর জাফরের বংশধররা যুগে যুগে জন্ম নেবে এবং তাদের মিত্রদের দ্বারাই পদাঘাত প্রাপ্ত হবে।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ভারত


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ